২৫ বছরেও কোলজুড়ে আসেনি সন্তান, তাই ছাগলের খৎনা অনুষ্ঠান ৩০০ মানুষকে খাওয়ালেন দিনমজুর দম্পতি

পশ্চিমাঞ্চল রিপোর্টঃদাম্পত্যের বয়স প্রায় ২৫ বছর। কিন্তু কোলজুড়ে আজও আসেনি কোনো সন্তান। দীর্ঘ এ জীবনে অসংখ্য আত্মীয়-স্বজনদের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, খেয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাউকে দাওয়াত দিয়ে নিজ বাড়িতে আনতে পারেননি তাঁরা। তাই আত্মতুষ্টির জন্য ব্যতিক্রম এ আয়োজন করেছেন এ দম্পতি। সম্প্রতি তাঁদের বাড়িতে পালিত একটি ছাগলের দুটি বাঁচ্চা হয়েছে। সেই বাচ্চা দুটিকে খৎনা দিয়েছেন তাঁরা। এরপর রঙিন কাপড়ে সাজিয়েছে বাঁচ্চা দুটিকে। জেলার কুমারখালীর নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামে দিনমজুর ওহাবের বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এ অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ স্বজন ও প্রতিবেশী দুপুরের খাবারে অংশ নেয়।
ব্যতিক্রমী এ ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামে। আলোচিত এ দম্পতি হলেন- ওই গ্রামের দিনমজুর ওহাব ও লাইলী বেগম। এদিকে ব্যতিক্রমী এমন আয়োজনের খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা তাঁদের বাড়িতে ভিড় করছেন ঘটনা জানতে ও ছাগলের বাঁচ্চা দুটি দেখতে।
এলাকাবাসী জানায়, ওহাব ও লাইলী বেগম ২৫ বছর আগে বিয়ে করেন। কিন্তু এতদিনেও তাঁদের ঘরে কোনো সন্তান জন্ম গ্রহণ করেনি। তবে একটি ছাগলের দুটি বাচ্চা হয়েছে। সেই বাচ্চা দুটির খৎনার আয়োজন করেন তাঁরা। এজন্য গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০০ মানুষকে খাইয়েছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে দিনমজুর ওহাব বলেন, ‘২৫ বছরেও বিবাহিত জীবনে ঘরে কোনো সন্তান জন্ম না নেওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। এবার আমার বাড়িতে একটি ছাগল দুটি বাচ্চা জন্ম দেয়। তাই আত্মতুষ্টির জন্য এমন আয়োজন করেছি।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজক ওহাব আলীর স্বজন তানভির হাসান বলেন, ‘অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি। আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল অনুষ্ঠানটি। জীবনে কখনো ছাগলের খৎনার অনুষ্ঠান দেখিনি এবং কোনোদিন অংশগ্রহণও করেনি। ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠানে সবাই খুব আনন্দ পেয়েছেন।’
স্থানীয় নয়ন মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের গ্রামের ওহাব আলীর সঙ্গে লাইলী বেগমের বিয়ে হয় দুই যুগ আগে। কিন্তু তাদের ঘরে কোনো সন্তান জন্ম হয়নি। এ জন্য মূলত ছাগলের বাচ্চার খৎনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ওহাব। অনুষ্ঠানে সবাই খুব আনন্দ পেয়েছে এবং তাদের বাড়িতে আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছিল। খুব ভালো লেগেছে ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠানটি।’