দামুড়হুদা অফিস : বারোমাসি সিডলেস লেবুর চাষ করে ব্যপক লাভবান হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার হাউলী গ্রামের সফল সবজী চাষী রমজান আলী। নিজ গ্রামের মাঠে দুই বিঘা জমিতে চাষ শুরুকরে ভালো লাভবান হওয়ায় এবার আরো তিন বিঘা জমিতে লেবুর চারা রোপণ করেছেন। স্বল্প শ্রম ও উৎপাদন খরচে কয়েকগুণ লাভ হওয়ায় ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ প্রচুর রস ও সুঘ্রাণযুক্ত এ লেবু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও তিনি মরসুম হিসাবে বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করে থাকেন।
লেবু চাষী দামুড়হুদার হাউলী গ্রামের মৃত নুর হক মণ্ডলের ছেলে রমজান আলি জানান, ২০১৮সালের আষাড় মাসে সিলেটে বেড়ায়ে যেয়ে সিডলেস পাতি লেবুর বাগান দেখে সে এই বাগান করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সময় সেখান থেকে ৭০ টাকা পিচ দরে ১৪হাজার টাকায় ২শ’ কলমের চারা কিনে আনে। পরবর্তিতে নিজের বিঘা ও তিন বছরের চুক্তিতে ৩০হাজার টাকায় এক বিঘা জমি লীজ নিয়ে ২বিঘা জমিতে ২শ’চারা রোপন করে। এসময় ২বিঘা জমি লীজ নেওয়া শ্রমিক দিয়ে চারা রোপন ও পরিচর্চা বাবদ খরচ হয় ৪৫ হাজার টাকা। চারা লাগানোর ৯মাসের পর তার বাগানে ফুল আসা শুরু হয়। ওই বছর সে ২লাখ টাকার লেবু বিক্রি করে। গাছ বাড়ার সাথে সাথে গছে ফুল ফলে ভরে যায়। চলতি বছরের রমজান মাসে তার দেড় লাখ টাকার লেবু বিক্রি হয়েছে এছাড়াও প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার লেবু বিক্রি হয়। এই লেবু স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা জমি থেকে কিনে নিয়ে যায়।
এছাড়াও তিনি এই লেবু গাছে কলম করে চারা বিক্রি শুরু করেছেন। চলতি বছরে ২বিঘা জমিতে ১৬ হাজার টাকা খরচ করে ৪হাজার কলমের চার করে ৩০টাকা পিচ দরে বিক্রি করছেন। এখান থেকে ১ লাখ ২০হাজার টাকার চারা বিক্রি হবে। বর্তমানে তার এই দুই বিঘা বাগানে পরিচর্চা সার, শ্রমিক মিলিয়ে এক বছরে খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। বছরে লেবু ও চারা বিক্রি করে আসে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত। চলতি বছর স্বল্প খরচে ভালো লাভবান হওয়ায় সে ১লক্ষ টাকায় ৩বিঘা জমি লীজ নিয়ে বিভিন্ন জাতের চারা রোপন শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় দুই বিঘা জমিতে লাগানে শেষ হয়েছে।তার দেখা দেখি অনেকেই এই সকল চাষের দিকে ঝুকে পড়েছে।
এই লেবু ছাড়া ও তার ২২বিঘা জমিতে পেপে, ৬বিঘা জমিতে কুল, ৬বিঘা পেয়ারার বাগান, ছাড়া ও মরসুম তরমুজ, গ্রীষ্মকালিন তরমুজ, ভারতীয় বারোমাসী সজিনার ডাটাসহসহ বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করে থাকে। সব মিলিয়ে সে একজন সফল চাষি।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা নিয়মিত লেবু চাষী রমজান আলীর বাগানের খোঁজ খবর নিয়ে থাকি ও সমস্ত ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি। সে এই বাগান থেকে ভালো লাভবান হচ্ছে। আমাদের পরামর্শ নিয়ে এবছর আরো তিন বিঘা জমিতে বাগান বাড়াচ্ছে।এই অঞ্চলের মাটি বেশ উর্বর এবং এই মাটি সব ধরণের ফসল উৎপাদনে সক্ষম।বেকার যুবকেরা চাইলেই ফসলের চাষ করে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারেন। আমরা তাদের সকল ধরণের সহযোগিতা করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *