ভালাইপুরে ছুরিকাঘাতে দুই বন্ধুকে খুনের ঘটনায় মামলা
আটক ২: বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত
ষ্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরে ছুরিকাঘাতে সজল ও মামুন অর রশিদ নামের দুই বন্ধুকে খুনের ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নিহত মামুনের ভাই স্বপন আলী ও সজলের ভাই রুবেল আলী বাদি হয়ে ১৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে আসামী করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান।
এ মামলার আসামীরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভালাইপুর হুচুকপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আকাশ আলী, উসমান আলীর ছেলে ছানোয়ার হোসেন, মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে বাধন আলী, আব্দুল খালেকের ছেলে মানিক, মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে আমিন, হৈচুদ্দিনের ছেলে রিয়ন, মৃত কেসমত আলীর ছেলে সাজে, তারা চাঁদের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, খবির উদ্দীনের ছেলে মিঠু, আলাউদ্দিনের ছেলে রতন আলী, মনোয়ারের ছেলে ইভন, আসাদুল ইসলামের ছেরে বিপ্লব হোসেন বিক্রম, মিলন হোসেনের ছেলে হৃদয় এবং জোড়াঘাটা গ্রামের মুসা করীমের ছেলে ভালাইপুর বাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা শান্তি ও দামুড়হুদা উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের রুপচাঁদের ছেলে আশরাফুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভালাইপুর নতুনপাড়া গ্রামের ছামেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভালাইপুর মোড় জনৈক আশরাফুল ইসলামের আশরাফুল বস্ত্রালয়ে ছিট কাপড় কেনার জন্য যায়। এ সময় দোকানের কর্মচারী রিয়নের সাথে তার দরদাম নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। তখন রিয়ন তাহার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং দোকান থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি বাড়ীতে যেয়ে তার ছেলে টিপুকে জানালে সে তার বন্ধু সজল, পলাশ, রাসেল, জুয়েল, আনিছুর, লিখন, হালিম, টিপু ও মামুনসহ ভালাইপুর মোড়ে আশরাফুলের দোকানে আসামী রিয়নের সাথে কথা বলতে যায়। এ সময় রিয়ন দোকানে না থাকায় রাত আনুমানিক ৮টার দিকে তার বাড়ীতে যায়। তাহা আসামী রিয়নের সাথে কথা বললে সে অনুশোচনা বোধ করায় তাকে নিয়ে তাদের মোটরসাইকেলে উঠে টিপুর মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য রওনা করলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন ভালাইপুর বাজারের ভালাইপুর মোড় সংলগ্ন জিনারুল ষ্টোরের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছালে সকল আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মামুনসহ তার বন্ধুদের পথরোধ করে। তখন আসামীদের সাথে তাদের তর্ক বিকর্ত হয়। এক পর্যায়ে আসামী আকাশ আলী ও ভালাইপুর বাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা শান্তির হুকুমে এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকল আসামীরা ধারালো অস্ত্র সন্ত্র সহকারে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আসামী বাধন তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে সজলকে হত্যার উদ্দেশ্যে নাভীর নিচে ডান পাশে আঘাত করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। যার ফলে তার পেটের ভুঁড়ি বেরিয়ে আসে। সে চিৎকার করে পড়ে গেলে আসামী আমিন তার হাতে থাকা ইট দিয়ে কপালের ডান পাশে আঘাত করিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম করে। তখন মামুনর রশিদসহ তার বন্ধুরা তাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলে আসামী আকাশ আলী তার হাতে থাকা ধারালো ভোজালী দ্বারা মামুনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুকের ডান পাশে পাজরের উপর আঘাত করিয়া ফুসফুসে আঘাত করিলে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। তখন সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে আসামী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে মামুনকে বুকের ডান পাশে পাজরের নিচে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় জীবন এগিয়ে আসিলে আসামী হৃদয় তার হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এ সময় আহতদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগীতায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জনই মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সদর উপজেলার হুচুকপাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে মানিক ও একই এলাকার খবির উদ্দিনের ছেলে মিঠুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
পশ্চিমাঞ্চল/পল্টন………………………..