পশ্চিমাঞ্চল অনলাইন মনিটর : হিমশীতল আবহাওয়া ও ভূমিকম্প পরবর্তী আফটারশকের মধ্যেই তুরস্ক এবং সিরিয়ার উদ্ধারকারীরা মঙ্গলবার ধ্বসে পড়া ভবনে চাপা পড়া জীবিত লোকদের উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশী লোক নিহত হয়েছে।

দুর্যোগ সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে এএফপি’র খবরে বলা হয়, একটি বিস্তীর্ণ সীমান্ত অঞ্চলের শহরগুলোতে কয়েক হাজার ভবন ধ্বসে সমতলে মিশে গেছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধ, বিদ্রোহ, উদ্বাস্তু সংকট এবং সাম্প্রতিক কলেরা প্রাদুর্ভাবে জর্জরিত এই অঞ্চলে আরো চরম দুর্দশা নেমে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছে যে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুক’পে পরিণত এই এলাকায় ২ কোটি ৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ডব্লিউএইচও’র সিনিয়র জরুরী কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটিকে বলেছেন যে ভূমিকম্প এলাকার মানচিত্রে দেখা যায়, ওই এলাকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি, এদের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সোমবার ভোররাতে প্রথম ৭.৮ মাত্রার ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের সময় বহুতল ভবনের বাসিন্দারা খালি হাতেই ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব এবং ভিতরে ঘুমন্ত অন্য কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। সে সময়ে সীমান্তের ওপারের তুর্কি অংশে, হাতায়ে শহরের এক মর্মন্তুদ চিত্র ভেসে ওঠে প্রাপ্ত এক বর্ণনায়, যখন ধ্বসে পড়া বিল্ডিংয়ের মধ্যে থেকে মুখ, চুল এবং পাজামায় ধুলোবালি মাখা সাত বছরের দিশাহারা এক কণ্যা শিশু বিচলিত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেছে- “আমার মা কোথায় ?”

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল- কাহরামানমারাস এবং গাজিয়েন্টেপের মধ্যবর্তী এলাকা। সেখানেই ঘটেছে সবচেয়ে প্রবল ধ্বংসযজ্ঞ। দুই মিলিয়ন লোকের একটি গোটা শহরেরই ধ্বংসস্তুপ এখন শুভ্র তুষারে ঢেকে আছে।
তুরস্কে মৃতের সংখ্যা ৩,৪১৯ অতিক্রম করেছে এবং সিরিয়ায় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৫,০২১- এ পৌঁছেছে । আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়বে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা অনুমান করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞে ২০,০০০ পর্যন্ত মারা যেতে পারে। আনুমানিক ২০,০০০ আহতদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *