জীবননগর অফিস : জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া গ্রামের ঘর জামাই ও ভুয়া সেনা কর্মকর্তা মফিজ(৪৫) সেনাবাহিনীর রেশনের বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কম দামে কিনে বেশী দামে বিক্রির প্রলোভন দিয়ে এলাকার বিক্রি লোকজনের নিকট থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। প্রতারনার শিকার ভুক্তভুগিরা টাকা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এলাকাবাসী সুত্র জানা গেছে,উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া গ্রামে কবির হোসেন ওরফে খোদা বকসের ঘর জামাই মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মফিজ এলাকায় নিজেকে সেনা কর্মকর্তা হিসাবে নিজেকে প্রকাশ করেন। মফিজ যশোর নড়াইলের আছির উদ্দিনের ছেলে। সে আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। সেনা কর্মকর্তা ও ঘর জামাই হিসাবে এলাকার মানুষের আস্থাও অর্জন করে। এক পর্যায়ে এলাকার বেশ কিছু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষকে প্রতারনার ফঁাদে ফেলে এবং তাদেরকে সেনাবাহিনীর রেশন চিনি,তেল,কম্বল,চাল,মশারি,গোল্ড লিফ,বেনসন সিগারেট কম দামে ক্রয় করে তা বাজারে বেশী দামে বিক্রি করা যাবে বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এলাকা থেকে উধাও হয়ে যায়। এদিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক মীর মাসুদুল হক খালেক ওরফে বুলু ডাক্তার প্রতারক ঘর জামাই মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মফিজের বিরুদ্ধে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
পল্লী চিকিৎসক বুলু বলেন,মফিজ নিজেকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসাবে আমাদের নিকট পরিচয় দিত। আমাদের এলাকায় ঘর জামাই হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিল। সে আমাদেরকে বলে সেনাবাহিনীর মালামাল ক্রয় করে তা খোলা বাজারে বিক্রি করলে কয়েকগুন বেশী লাভ হবে। তার অব্যাহত প্রলোভনের এক পর্যায়ে আমি রাজি হয়ে যাই এবং আমার নিকট থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে সোনালী ব্যাংক আন্দুলবাড়ীয়া শাখার চেক প্রদান করে। কিন্তু ওই ব্যাংকে তার তেমন কোন টাকা নেই মর্মে ব্যাংক কতর্ৃপক্ষ জানায়। আমি তাকে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি।
আমরা সরল বিশ্বাসে মফিজকে টাকা দিই। আমার মত মফিজের প্রতারনার শিকার হয়েছেন আমাদের এলাকার খোকন,রফিকুল ইসলাম,মতিয়ার রহমান,দাউদ হোসেন,খন্দকার রফিকুল ইসলাম,জুয়েল হোসেন,ছোট বুড়ো,মিজানুর রহমান,আশিকুল ইসলাম রনিসহ এলাকার ব্যবসায়ীরা। আমাদের নিকট থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকারও বেশী টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই মফিজের প্রতারনার শিকার হওয়া মানুষের তালিকা লম্বা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে মফিজ একাধিক জায়গায় বিয়ে করেছে এবং তার নামে অনেক থানায় মামলা রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান খোকন মিয়া বলেন,মফিজ আমার নিকট থেকেও ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। প্রতারক মফিজের খপ্পরে পড়ে আমার মত এলাকার অনেকেই নি:স্ব হয়েছেন। এখন আর মফিজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ হাফিজুল ইসলাম বলেন,মফিজকে আমরা সেনাবাহিনীর অফিসার হিসাবেই চিনতাম এবং সে নিজেও তাই পরিচয় দিত। কিন্তু এখন শুনছি সে একজন প্রতারক এবং এলাকার বহু মানুষকে প্রতারনার ফঁাদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে সটকে পড়েছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন,ঘটনার কথা এলাকাবাসির নিকট শুনেছি। তবে কেউ এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।