ষ্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। করোনার সংক্রমণ লাগামহীনভাবে বাড়লেও মানুষের মাঝে সেভাবে স্বাস্থ্য সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিবারের উদাসিনতার কারণে প্রতিদিন নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পচ্ছে। বিশেষ করে যে পরিবারের সদস্য করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে সে ব্যক্তি তাদের পরিবারের সাথে থাকার কারণে করোনাভারাসের প্রাদুর্ভাব রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এ কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও তারা স্বাস্থবিধি মানছে না। দিন যত পার হচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝ থেকে করোনার ভয় কমতে থাকছে। সরকারীভাবে সময় নির্ধারণ করা হলেও মার্কেটের দোকান দোকানপাট বন্দ থাকলেও শহরের গলিতে গলিতে নিয়ম না মেনে খোলা রাখছে রাত ১০ পর্যন্ত।
বিশেষ করে চায়ের দোকান গুলোতে রাত ১০ টারও বেশী সময় ধরে খোলা রাখতে দেখা গেছে এবং সেখানে সামাজিক দুরত্ব না মেনে মানুষজন গায়ে গা লাগিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। শুধু তাইনা, বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরে মানুষের আনাগোনা যেভাবে বাড়তে থাকে তাতে করোনার ঝুকি থেকেই যাচ্ছে। আর এর কারণে দিন দিন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৭ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৪৩ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৩ জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ১১ জন এবং জীবননগর উপজেলায় ১০ জন। আক্রান্তের দিক দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সবার উপরে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার একমাত্র কারণ হিসাবে সাধারণ মানুষ মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, বেশীরভাগ রোগীকে তাদের বাড়ীতে রেখে চিকিৎসা দেয়ার কারণে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা পরিবারের সবার সাথে চলাফেরা করছে এবং ওই পরিবারের লোকজন বাইরের অন্যান্য মানুষের সাথে মিশে বেড়াচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের অধিক সচেতন হতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করতে হবে।
গতকাল শনিবার ১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ। আর এই ৫ জনই আলমডাঙ্গা উপাজেলার বলে নিশ্চিত করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান। আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জনই আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর গ্রামের, ১জন পাইকপাড়ার এবং কলেজপাড়ার ১ জন। এদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ আর ২ জন নারী আর তাদের বয়স ১৬ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩শ’ ৬৯ জনে দাড়ালো, সুস্থ হয়েছে ২২৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ জন।
এদিকে, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মরহুম আসাদুল হক জোয়ার্দ্দার লেমনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। গতকাল শনিবার কুষ্টিায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে আসা তার পরাীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে ১০ জনের নমুনা সংগ্রহের ফলাফল আসে। যার মধ্যে ৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ। আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জনই আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর গ্রামের, ১জন পাইকপাড়ার এবং কলেজপাড়ার ১ জন। এদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ২ জন নারী এবং তাদের বয়স ১৬ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ৩শ’ ৬৯ জন, সুস্থ হয়েছে ২২৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৫ জন। তিনি আরও জানান, গতকাল শনিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ১৪৫ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৯১ জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ৯৩ জন এবং জীবননগরর উপজেলায় ৪০ জন। আক্রান্তের দিক দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অবস্থা খুবই খারাপের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *