দর্শনার চাতালপাড়া থেকে নাবালিকা কন্যাসহ আটককৃত সেই চক্রের আবারও প্রতারণার ফাঁদ
দর্শনার হঠাৎপাড়ার প্রতারক তাজুল ইসলামসহ উভয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলা

চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা করার অভিযোগে মহিলাসহ ৩ জনকে আটক করছে হিজলগাড়ী পুলিশ। মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাসাভাড়া নিয়ে দেহব্যবসার অভিযোগ উঠেছে কোটচাঁদপুরের হাসান ও মিলনের বিরুদ্ধে।

তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা খোয়ালেন দামুড়হুদা হেমায়েতপুরের বাবু ও হিরোক। ভুক্তোভোগিদের অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে মক্ষিরানীসহ প্রতারক চক্রের ৩ সদস্যকে। টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে দর্শনা হঠাৎপাড়ার তাজুল ইসলাম। ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার হাফিজুর রহমানের ছেলে হাসানুজ্জামান হাসান ও ছাবদালপুর গ্রামের বাজারপাড়ার আজির বক্সের ছেলে মিলন তথ্য গোপন করে এক সাপ্তাহ আগে বাসাভাড়া নিয়ে ওঠে চুয়াডাঙ্গা হিজলগাড়ী বাজারপাড়ার আঃ রাজ্জাকের ছেলে শান্তর বাড়ীতে। ভাড়াটিয়া হাসান ও মিলন নিজেদের বিভিন্ন ব্যবসা আছে বলে বাড়ীর মালিককে জানান।

মঙ্গলবার ১০ আগষ্ট দুপুর ১২টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের মৃত. নুর মোহাম্মদের ছেলে বাবু (৩৫) ও মকবুল হোসেনের ছেলে হিরোক আলী (৪০) পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ওই বাড়ীতে বেড়াতে যায়। এদিকে বাবু ও হিরোক বাড়ীতে পৌঁছানোর পর শুরু হয় চক্রান্ত। তাদেরকে নারীসহ একটি কক্ষে বসার ব্যবস্থা করে হাসান ও তার স্ত্রী তাজ নাহার (৩৫)। একপর্যায়  জোরপূর্বক নারীর সাথে আপত্তিকর ছবি তোলে চক্রটি। ছবিতুলে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং মারধর করে বাবু ও হিরোকের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকচক্র। সবকিছু খুয়িয়ে বাড়ী ফিরে যায়। বিকালে আবার ফিরে আসে হিজলগাড়ীতে। বিষয়টি হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশকে জানালে পুলিশ সন্ধ্যার দিকে ওই বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে প্রতারক চক্রের সদস্য হাসানুজ্জামান হাসান (৪০), মিলন (৩২) ও হাসানের স্ত্রী মক্ষিরানী তাজ নাহারকে। সেই সাথে উদ্ধার করে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা।

গ্রেফতাকৃতরা জানান, ওই টাকা দর্শনা হঠাৎপাড়ার আবুল হোসেন নাতিজামাই জনৈক তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু ঘটনার পরপরই নিয়ে চলে গেছে। পুলিশ হঠাৎপাড়ায় তাজুলের বাড়ীতে অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করতে পারে নি। এঘটনায় ভূক্তোভোগিরা ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাড়ীর মালিক শান্ত জানায়, ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তেমন খোঁজখবর নেয়া হয় নি। কারণ এলাকার কিছু পরিচিত মুখের সুপারিশে তাদের কাছে ৪ হাজার ৮শ’ টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেয়া হয়।

বাবু ও হিরোক বলেন, বিশ্বাস করে বেড়াতে এসে ফেঁসেগেছি।

হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই তাপস সরকার বলেন, তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, আটককৃতরা বিভিন্ন স্থানে ঘর ভাড়া নিয়ে খদ্দেরদের লালসার শিকার করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাদেরকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে। তবে, কিছুদিন আগে তাদেরকে দর্শনা মোহাম্মদপুরের চাতালপাড়ার শিক্ষক আশরাফুজ্জামান মাসুমের ভাড়া নেওয়া বাড়ী থেকে নাবালিকা কন্যাসহ তাদেরকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরা জামিনে মুক্ত হয়ে স্থান পরিবর্তন করে এক সপ্তাহ আগে হিজলগাড়ী বাজারপাড়ার মৃত আঃ রাজ্জাকের ছেলে শান্তর বাড়ী ভাড়ায় বসবাস শুরু করে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *