ষ্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরে কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার ভালাইপুর মোড়ের হুচুকপাড়া সড়কের প্লাস পায়েন্ট নামক এক দোকানের সামনে ওই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের ফিল্ডপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে আলমসাধু চালক সজল হোসেন (২৭) ও একই গ্রামের স্কুলপাড়ার আজিজুল হকের ছেলে এনজিওকর্মী মামুন অর রশিদ (২৪)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাব্বুর রহমান। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। একই সাথে পরবর্তীতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভালাইপুর নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা টিপু সুলতান জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আমার মা সামিনা খাতুন ভালাইপুর মোড়ে আশারাফুল বস্ত্রালয় অ্যান্ড গার্মেন্টসে কাপড় কিনতে যান। কাপড়ের দাম জিজ্ঞেস করলে দোকানের কর্মচারী রিয়ন ৮২ টাকা বলে। আমার মা ৮০ টাকায় কাপড়টি চাইলে বিষয়টি নিয়ে ওই কর্মচারীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে, কাপড় পরিমাপের স্কেল দিয়ে আমার মাকে আঘাত করে দোকানের কর্মচারী রিয়ন। আমার মাকে গালিগালাজ করে দোকান থেকে বের করে দেয় সে। বিষয়টি মিমাংশার জন্য সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমার বন্ধু সজলের আলমসাধু যোগে আমার আরেক বন্ধু মামুনকে সাথে নিয়ে কাপড়ের দোকানে যায়।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভালাইপুর-হুচুকপাড়া সড়কের প্লাস পয়েন্ট নামক এক দোকানের সামনে পৌঁছায়। এ সময় হুচুকপাড়ার ওসমানের ছেলে ছানোয়ারের নির্দেশে একই এলাকার আলার ছেলে আকাশ, মুছা করীমের ছেলে শান্তি, ওসমানের ছেলে জাহাঙ্গীর ধারালো অস্ত্র ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে শুরু করে। এতে সজল ও মামুর অর রশিদ গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরে, স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জনই মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুর রহমান বলেন, সজল ও মামুন অর রশিদ নামের দু’জনকে জরুরী বিভাগে আনা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে সজলের পেটে ও মামুন অর রশিদের বুকে আঘাত করা হয়েছে। জরুরী বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সজলের মৃত্যু হয়। গুরুতর আঘাত পাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মামুন অর রশিদকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সদর হাসপাতালের পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামুন অর রশিদের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাব্বুর রহমান জানান, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।