চুয়াডাঙ্গায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি
- স্বাধীন-সার্বভৌম,সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন স্টাফ রিপোর্টার: সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের ডিসি সাহিত্য মঞ্চে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বাঙালি-জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বজ্রকণ্ঠে যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তির ডাক। সরকার এ দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।” বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, “স্বাধীনতা বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। তবে তা এক দিনে অর্জিত হয়নি। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ এর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের এই দীর্ঘ বন্ধুর পথে বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম সাহস, সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সঠিক দিকনির্দেশনা জাতিকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।” “স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’য় পরিণত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। মহান এ নেতার সে স্বপ্নপূরণে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলা সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ যেমন ১৯৭১ সালে বাঙালিকে আবেগে-সংগ্রামে-সাহসে প্লাাবিত করেছে, তেমনি আজও এই ভাষণ যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার করে তোলে। বিশ্বের যেকোনো দেশের মুক্তি সংগ্রামে এই ভাষণ তাই প্রেরণার অনির্বান শিখা। আর এ কারণেই ৭ই মার্চের স্বীকৃতি পরম আনন্দের এবং গর্বের। জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ। অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ। এটি ইউনেসকোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা গোটা দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত গর্বের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। মহান এই নেতার সে স্বপ্নপূরণে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর সন্ধিক্ষণে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি দল-মত-নির্বিশেষে সকলকে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানাই।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মালিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, সাবেক জেলা মু্ক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হোসেন, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেমদ, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমজাদ হোসেন, সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল ফেরদৌস, সবুজ কুমার বসাক, ফিরোজ হোসেন, সুরাইয়া মমতাজ, হাবিবুর রহমান, নূর পেয়ারা বেগম, নজরুল ইসলাম, রিফাত জাহান, মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, শহিদুল আলমসহ বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী।