গাংনীর পল্লীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বাড়ীতে গভীর রাতে আগুন দেয়ার অভিযোগ
গাংনী অফিস: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভবানিপুর গ্রামে আসাদুল ইসলামের বসত বাড়ীর ঘরের মধ্যে গভীর রাতে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।গত সোমবার রাত ২টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
দীনমজুর আসাদুল ইসলাম বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গভীর রাতে আমার বসত বাড়ীতে আগুন দেয়।এসময় আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করে পালিয়ে যায়।আমার ঘরের মধ্যে থাকা নগদ ৪ হাজার টাকাসহ একটি চৌকি ও ঘরের আসবাবপত্র লেপ কাথা পুড়ে অন্তত ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন গৃহকর্তা।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় আমিসহ বাড়ির লোকজন রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।রাত আনুমানিক ২টার দিকে একই পাড়ার প্রতিপক্ষ ভবানিপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মতিয়ার রহমান সাবেক মেম্বর,আরমান আলী,রবিউল ইসলাম,একইপাড়ার মান্নাফ আলীর ছেলে জামিল মাস্টার,দুলাল হোসেন,মতিয়ারের ছেলে কাজল হোসেন,আরমান আলীর ছেলে শুভ হঠাৎ আমার বাড়ীতে প্রবেশ করে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় আমি বাধা দিলে আমাকে মারধর করে পালিয়ে যায়। আমার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা টের পেয়ে আগুন নেভায়।
এখবর শুনে গ্রামের বর্তমান মেম্বর আনারুল ইসলাম ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে আগুন নেভাতে সহযোগীতা করেন।অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ভবানিপুর কাম্পের সদস্যরা রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন।
আসাদুল ইসলামের ভাই কামরুল ইসলাম বলেন,আমার বাবার পৈত্রিক জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষ ভবানিপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মতিয়ার রহমান সাবেক মেম্বর, আরমান আলী,রবিউল ইসলাম,একইপাড়ার মান্নাফ আলীর ছেলে জামিল মাস্টার,দুলাল হোসেন এর সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ী থেকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে এর আগেও আমার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছিল। এছাড়াও গ্রামের গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গাংনী থানা পুলিশ থেকে মিমাংসা করে আমাদের ২৮ শতক জমি ছেড়ে দেন।সেই থেকে উক্ত জমিতে আমরা কলা বাগান করে ভোগদখল করে চাষ করছি।গত শনিবার বাগানে থাকা কলা গাছ কর্তন করে জোরপূর্বক দখল করেছে।এঘটনায় আমার ভাই আসাদুল বাদি হয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দেয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সোমবার রাত ২টার দিকে আসাদুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বসত বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
ভবানিপুর গ্রামের মেম্বর আনারুল ইসলাম অগ্নিকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,আমি রাত ২টার দিকে খবর শুনে গিয়ে দেখি আসাদুল কান্নাকাটি করছে।তার ঘরের মালামাল পুড়ে গেছে।অগ্নিকান্ডের ঘটনা জানতে চাইলে বলেন,প্রতিপক্ষরা তার ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়েছে।আমি রাতে মতিয়ারের সাথে কথা বলতে বাড়ীতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি ,সে পালিয়েছিল।
এঘটনায় প্রতিপক্ষ দুলাল হোসেন জানান,আমাদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আসাদুল ও কামরুল এর আগেও তারা তাদের বাড়ী নিজেরা ভাংচুর করে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।আবারো তারা নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে আমাদের ফাসানোর চেষ্টা করছে।এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।আমাদের পক্ষে ১৪৪ধারা মামলার রায় হওয়ায় আমরা ২৮শতক জমি জবর দখল করে চাষ করেছি।
একই কথা জানালেন,প্রতিপক্ষ জামিল মাস্টার।তিনি বলেন,আবারো তারা আমাদের নামে গাংনী থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমাদের মানহানি করার চেষ্টা করছে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, এঘটনা শুনেছিকেউ অভিযোগ করেনি।পুলিশের একটি টীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।তদন্ত করা হচ্ছে।শত্রুতা করে আগুন দেয়া হয়েছে নাকি অন্য কোনভাবে আগুনের সুত্রপাত তা খতিয়ে দেয়া হচ্ছে।