বিশ্বকাপ বাছাইপর্বকে সামনে রেখে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বার্সেলেনো সুপারস্টার লিওনেল মেসি। আর এর মাধ্যমে বার্সেলোনায় তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নাটকীয়তাকে কিছুদিনের জন্য হলেও ভুলে জাতীয় দলের হয়ে নিজের সেরাটা দিতে প্রস্তুত মেসি।  ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল এই সুপারস্টার এখনো আন্তর্জাতিক জার্সি গায়ে বিশ্বকাপের শিরোপাটি তুলে ধরতে পারেননি। এবারই হয়ত তার সামনে শেষবারের মত সেই সুযোগটা হাতছানি দিচ্ছে।

ছয়বারের রেকর্ড ব্যালন ডি’অর জয়ী ৩৩ বছর বয়সী মেসি ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে সবকিছুই পেয়েছেন। আর সেটা একবার নয়, বহুবার। কিন্তু তার আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের রেকর্ডটা এখনো অধরাই থেকে গেছে। 

মেসি বলেন, আমার এখন ক্যারিয়ারে আর একটি মাত্র লক্ষ্য পূরণ বাকি রয়েছে, জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয় করা।

২০১৪ সালে জার্মানীর বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। শিরোপার এত কাছে গিয়েও দলকে কিছুই উপহার দিতে পারেননি মেসি। বৃহস্পতিবার ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের মিশন শুরু করতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। আর প্রথম দিন থেকেই মেসির সামনে থাকবে শুধুমাত্র স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্য।

কাতার বিশ্বকাপ যখন শেষ হবে ততদিনে মেসির বয়স বেড়ে দাঁড়াবে ৩৫। আর চার বছর পর উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী বিশ্বকাপের সময় তার বয়স হবে ৩৯ বছর। ইকুয়েডরের পর আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী ম্যাচ খেলতে আর্জেন্টিনা বলিভিয়া সফরে যাবে।
গত মৌসুমের শেষে মেসি কাতালান জায়ান্ট ছেড়ে অন্যত্র যাবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বার্সা সভাপতির দেয়া ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজের চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত তার আর যাওয়া হয়নি।

ঘরের মাঠে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচটিতে স্বাগতিকরা হয়ত দীর্ঘদিন পর নতুন করে মেসিকে স্বাগত জানাতে পারবে। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলে সবসময়ই কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে পরীক্ষীত ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচটি যে মোটেই সহজ হবে না তা অনুমেয়। চার বছর আগে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচেই বুয়েন্স আয়ার্সের রিভার প্লেট স্টেডিয়ামে ইকুয়েডরের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল আর্জেন্টিনা।

এই ম্যাচে পরাজিত হয়ে আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বের বাঁধা অতিক্রম করা কঠিন হয়ে পড়ে। শেষ ম্যাচ পর্যন্ত মেসির আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ইকুয়েডরের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচটিতে মেসির হ্যাটট্রিকে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয় দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনার।

কালও আর্জেন্টিনার আরেকটি ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম বোকা জুনিয়র্সের বোমবোনেরাতে সেই ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে মেসি বাহিনী। তবে এবারের পরিবেশটি একেবারেই ভিন্ন। করোনার কারণে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামেই খেলতে হবে দলগুলোকে। দক্ষিণ আমেরিকায় কোভিড পরিস্থিতি মোটেই আশাব্যঞ্জক না হওয়ায় দর্শকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি মিলেনি।

গত বিশ্বকাপে হতাশ করা দলটির থেকে এবারের আর্জেন্টাইন দলটি অনেকটাই পরিবর্তিত। তরুন কোচ লিওনেল স্কালোনির অধীনে অপেক্ষাকৃত তরুণ দলটিও বেশ উজ্জীবিত। জর্জ সাম্পাওলির নেতৃত্বে চার বছর আগে রাশিয়ায় কিছুই করতে পারেনি মেসিরা। যদিও স্কালোনিও তরুণদের পাশাপাশি মেসির মতই বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের ওপরই আস্থা রেখেছেন।

এ সম্পর্কে স্কালোনি বলেছেন, আমার এই দলে সাত থেকে আটজন পুরোনো খেলোয়াড় রয়েছে। যাদের নিয়েই মূল ভরসা করতে হচ্ছে। মাত্র একদিনের প্রস্তুতিতে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *