করোনার দ্বিতীয় ধাপের ভয়াল অবস্থায় সরকারি আদেশ অমান্য করে
চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে জমজমাট কোচিং ও প্রাইভেট বানিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার: চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। করোনার প্রথম ধাপের থেকে দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় উদ্বিগ্ন খোদ বাংলাদেশ সরকার। করোনার শুরু থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও থেকে নেই কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানোর নামে গণহারে ছাত্র-ছাত্রী জমায়েত। স্বাস্থ্যবিধি মানার ধারে কাছে নেই তারা। দেশে মহামারি করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় গত বছরের মার্চে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কোচিং সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেন সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু এরই মধ্যে করোনার প্রকোপ আবারও বাড়তে শুরু করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও চুয়াডাঙ্গায় থেমে নেই কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানোর মহোৎসব।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা উপক্ষা করে সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে চুয়াডাঙ্গার শহরের বিভিন্ন স্থানে চলছে কোচিং বানিজ্য ও প্রাইভেট পড়ানোর মহোৎসব। এতে করোনার সংক্রমনের মারাত্মক ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের এমার্জেন্সি রোড, সরকারি কলেজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে এবং সদর হাসপাতাল সড়কের সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পিছনে, ডায়াবেটিস হাসপাতালে উত্তর পাশের্ব, সিনেমা হল পাড়ার বিভিন্ন অলি-গলিতে প্রাইভেট পড়ানোর নামে চলছে কোচিং বানিজ্য। একটা ঘরের ভিতর একত্রিত অনেকগুলো শিক্ষাথর্ী নিয়ে সেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধির কোন রকম তোয়াক্কা না করে এভাবেই তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উত্তর পাশের রাস্তা দিয়ে একটু ভিতরেই রাস্তার বাম পাশের্ব তৃতীয় তলা হলুদ বাড়ির নীচ তলায় সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেখানে প্রাইভেট পড়ান অতি পরিচিত মোকাদ্দেস হোসেন। তিনি তার বাড়ির নীচ তরায় একত্রিত অনেকগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের গণজমায়েত করে দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট পড়িয়ে আসছেন। সেখানে স্বাস্থ্যবিধির তোয়ক্কা করা হচ্ছে না। পাশাপাশি গায়ে গাঁ ঠেকিয়ে সবাইকে একত্রিত বসে প্রাইভেট পড়তে দেখা গেছে।
সদর হাসপাতাল সড়কের প্রবেশ মুখে জে,কিউ ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংলিশ ভার্সন স্কুল নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। সেখানেও ছেলে মেয়েরা একত্রিত গাঁয়ে গাঁ লাগিয়ে পাশাপাশি বসে প্রাইভেট পড়তে দেখা গেছে। সেখানে প্রাইভেট পড়ান সদর উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামের শরীফ ও আসমানখালীর মতিয়ার রহমান।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে মোকাদ্দেস হোসেন বলেন, কোচিং বা প্রাইভেট পড়ানো যাবে না এধরনের সরকারি কোন নির্দেশনা এখনও পাইনি। সামাজিক দুরত্বর বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে আমি বাড়িতে ছিলাম না সেকারনে হয়তো তারা একত্রিত বসেছিলো।
জে,কিউ ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংলিশ ভার্সন স্কুলের পরিচালক শরীফের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে বেতন নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করে দিবো।
চুয়াডাঙ্গা শহরে গড়ে ওঠা এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে নজর দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমানের সু-দৃষ্টি কামনা করেছে এলাকার সচেতন মহল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *