আহসান আলম: হেমন্ত কালের মধ্যভাগে উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘাসের ডগায় মুক্তার দানার মত শিশির বুন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। জালা শহরের দালান-কোঠায় শীতের উঞ্চতা একটু দেরিতে আসলেও চুয়াডাঙ্গার গ্রামীন জনপদে আগে থেকেই শীতের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে রোদের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে। তবে সারাদিনের আবহাওয়ায় একটু-আধটু গরম অনুভূত হলেও বিকেল গড়াতেই বোঝা যাচ্ছে শীতের পরিবেশ। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে পৌষ-মাঘ এই দুই মাস মিলে শীতকাল। এখন বাংলা সনের কার্ত্তিক মাসের প্রায় শেষভাগ। আর কয়েকদিন পরেই শীতের পরশ নিয়ে হাজির হবে পৌষমাস। আর পৌষের আগে প্রকৃতি এভাবে জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলার শহরসহ উপজেলার হাটবাজার গুলোতে লেপ-তোশকের কারিগরদের কর্মব্যাস্ততা বেড়ে গেছে। এছাড়াও গ্রামগঞ্জে ঘুরে গৃহস্থের চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক বানানোর কাজ করছেন মৌসুমী এসব কারিগররা। বর্তমানে একটি লেপ বানাতে খরচ নেয়া হচ্ছে ১২শ’ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে তুলা আর কাপড়ের গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে লেপ-তোশকের দাম নির্ধারণ করেন তারা। লেপ-তোশকের কারিগররা জানান, কাপড় ও তুলার দাম বেশি হওয়ার কারনে খরচ আগের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধা পেয়েছে। এছাড়াই এটি একটি মৌসুমী ব্যবসা। সারা বছর অলস ময় কাটানোর পর শীতের কয়েকমাস কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে দিনরাত পরিশ্রম করে অতিরিক্ত উপার্জন করে নিজেদের স্বচ্ছলাতা ফেরানোর চেষ্টা করি। শীতের প্রকট যত বেশি হয়, কাজও ততো বেড়ে যায়।
এদিকে, শীতের আগমনী বার্তায় আমন ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার চাষিরা।
অরপদিকে,খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিতে শুরু করছেন গাছিরা। শীতের সকালে খেজুর রসের গুড়, পায়েস আর আমনের পিঠাপুলির উৎসবের আয়োজনে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন গৃহবধুরা। শীত অনেকের কাছে আনন্দের আবার অনেকের কাছে যন্ত্রণারও বটে। তবে বেশিরভাগ মানুষ শীত মৌসুমকেই পছন্দ করে থাকে। শীতের সময় ভ্রমণপ্রেমীরা বিভিন্ন জেলার পর্যটন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে থাকেন। করোনার মহামারির কারনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি উম্মুক্ত করা হয়েছে সুন্দরবনসহ জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
এদিকে, শীতের আগমনে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে বেশিরভাগ শিশুই সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। করোনার মহামারির মধ্যে সর্দি-জ্বরকে স্বভাবিকভাবে নিতেও সাহস পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেন, যেহেতু ঠান্ডায় করোনার প্রকোপ বেড়ে যায়, সেহেতু শীতকাল আমাদের জন্য হুমকি বলতে পারি। আসন্ন শীতকালে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সকল প্রতিরক্ষামুলক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *