ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো রয়টার্সের ফাইল ছবি

পশ্চিমাঞ্চল অনলাইন মনিটরঃইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো। একই সঙ্গে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অব্যাহত রাখান আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোরোশেঙ্কো বলেন, ‘দ্রুততম সময়ে শান্তি ফেরানোর উপায় উপায় হচ্ছে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আমাদের তিনটি জিনিস দরকার: অস্ত্র, অস্ত্র আর অস্ত্র।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাওয়া এবং তাদের পণ্য নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন পোরোশেঙ্কো। বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ইউক্রেনের আকাশসীমায় রাশিয়ার বিমান উড্ডয়ন বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের রাশিয়া ও দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন পোরোশেঙ্কো।

৫৬ বছর বয়সী পোরোশেঙ্কো ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে গত বছরের ডিসেম্বরে ইউক্রেন ছাড়েন পোরোশেঙ্কো।

তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার জন্য উত্তরসূরি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহযোগীদের দায়ী করেন পোরোশেঙ্কো।

 

তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৪–১৫ সালে রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের সহযোগিতার অভিযোগেরও তদন্ত হয়। অভিযোগ ছিল, অবৈধভাবে কয়লা বিক্রির মাধ্যমে বিদ্রোহীদের তহবিল সংগ্রহের সুযোগ দিয়েছেন তিনি। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে পোরোশেঙ্কোর ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তাঁর দল এ মামলার জন্য জেলেনস্কির বিরুদ্ধে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে দিতে বেপরোয়া চেষ্টা চালানোর অভিযোগ তুলেছে।

ইউক্রেনের অন্যতম ধনী ব্যক্তি পোরোশেঙ্কো গত বছরের ডিসেম্বরে দেশ ছাড়লেও এ বছরের জানুয়ারিতেই ফিরে আসেন। সম্ভাব্য রাশিয়ান আক্রমণ থেকে দেশকে বাঁচাতেই তিনি ফিরেছেন বলে ঘোষণা দেন। দেশে ফেরার পর এক প্রসিকিউটর পোরোশেঙ্কোকে গ্রেপ্তারের আবেদন করেছিলেন। তবে বিচারক ওই আবেদন খারিজ করে সাড়ে তিন কোটি ডলারে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

 

রাশিয়ার ‘অপরাধ’

পোরোশেঙ্কো দাবি করেছেন, যুদ্ধে ‘রাশিয়ার বর্বরতায়’ এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি বেসামরিক ইউক্রেনিয়ান নিহত হয়েছেন। মারিউপোলে ‘গণহত্যা’ চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। এই শহরে রুশ সেনারা রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ তাঁর।

সপ্তাহখানেক আগে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি রুশ হামলায় মারিউপোলে লাখ লাখ মানুষ নিহত হওয়ার দাবি করেছিলেন।

রাশিয়ার ‘অপরাধের’ তদন্তের দাবি জানিয়ে পোরোশেঙ্কো বলেন, দেশ রাশিয়ান সেনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনিয়ানরা আত্মসমর্পণ করবে না, হাল ছাড়বে না।

‘ইউক্রেনের দনবাস ও ক্রিমিয়া দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না,’ বলেন পোরোশেঙ্কো। এ ছাড়া রাশিয়ার সমর্থনে সেনা না পাঠাতে আরব বিশ্বের নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি নির্দিষ্টভাবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের কথা উল্লেখ করেন। ১১ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলা সিরিয়া বরাবরই রাশিয়ার সমর্থন পেয়েছে।

ইউক্রেনে হামলা শুরুর আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বাশার আল–আসাদের সঙ্গে কথা বলতে সিরিয়া সফর করেন। তখন পুতিনের প্রতি তাঁর সমর্থন জানান আসাদ।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *