স্পোর্টস রিপোর্টার :৮ই মার্চ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তামিম ইকবালের হাতে তুলে দেয় জাতীয় ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে শেষ হয় মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্বের অধ্যায়। তবে করোনা মহামারির কারণে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সব সিরিজ স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ৭ মাস কেটে গেছে। দেশের হয়ে কোনো ম্যাচে আনুষ্ঠানিক নেতৃত্ব দিতে তামিমের আর মাঠে নামা হয়নি। তবে আজ ‘অধিনায়ক’ তামিমের অন্যরকম এক লড়াই। করোনা বিরতি ভাঙতে বিসিবি আয়োজন করেছে তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্ট ‘প্রেসিডেন্ট কাপ’। টুর্নামেন্টে আজ মাঠে নামছে তামিম একাদশ।

প্রতিপক্ষ দেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। যারা আসরে উদ্বোধনী ম্যাচে হার দেখেছে নাজমুল হাসান শান্তর দলের বিপক্ষে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রত্যাশা নিয়ে তামিম ইকবাল বলেছেন, ‘প্রত্যাশা হলো আমরা অনেক দিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে আসছি। একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক আসর হবে। প্রায় ৫০-৬০ জন ক্রিকেটার আমরা এই টুর্নামেন্টটা খেলবো। আসলে জাস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসছি এই চিন্তা না করে আমার কাছে মনে হয় অনেক কিছু, ব্যক্তিগতভাবে অনেক কিছু পেতে পারি। কেউ যদি ভালো ব্যাটিং করে। ভালো একটি বোলিং পারফরম্যান্স করে। তার জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে যেতে পারে। এটা একটা সুযোগ সবার জন্য এই টুর্নামেন্টে পারফর্ম করে ভালো করে নিজের জায়গাটা তৈরি করে নেয়ার।’
আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পাওয়ার আগে তামিম দেশের হয়ে ৩টি ওয়ানডে ম্যাচে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অধিনায়কত্ব করেছেন। গেল বছরের জুলাইয়ে তার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে অবশ্য তার দল একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। হোয়াটওয়াশ হয়ে দেশে ফেরেন তামিমরা। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি অনেক ম্যাচেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৩-২০১৭ তিনবার বিপিএলে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম। দুরন্ত রাজশাহী, চিটাগং ভাইকিংস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এই তিন দলের নেতৃত্বে ছিলেন। পরিসংখ্যান বলছে, বিপিএলে ৩৪ ম্যাচে ১৪ জয় অধিনায়ক তামিমের। হার ২০টিতে। অধিনায়ক হিসেবে এই আসরে শিরোপা জেতা হয়নি তার। তবে ২০১৬ সালে তামিমের নেতৃত্বেই ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে শিরোপা জেতে আবাহনী। এ ছাড়াও ২০১০-১১ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে তিনি একটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছিলেন। পাশাপাশি ২০১২-১৩ মৌসুমে জাতীয় লীগে ২টি ম্যাচ আর ২০১৩-১৪ মৌসুমে বিসিএলে দুটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে দেখা গেছে তামিমকে। এ ছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন এই বাঁহাতি ওপেনার। এরপর ২০১৬ সালে আবাহনীকে পুরো আসরে নেতৃত্ব দেন তিনি।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে তামিমের দল অনুশীলনে আসে বিকাল সাড়ে ৫টায়। দিবারাত্রির ম্যাচ বলেই ফ্লাডলাইটের আলোয় নিজেদের ঝালিয়ে নেয় তারা। অধিনায়ক তামিম তার একাদশে পেয়েছেন একঝাঁক প্রতিভাধর তরুণ ক্রিকেটার। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলী, ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পেসার শরিফুল ইসলাম রয়েছেন এই দলে। গতকাল অনুশীলনে শরিফুলের বলে বোল্ড হন তামিম ইকবাল। এ ছাড়াও সাহাদাত হোসেন, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি, তরুণ লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন রাব্বি যোগ করবেন বোলিং আক্রমণের বৈচিত্র্য। অভিজ্ঞদের মধ্যে আছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, মোস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, এনামুল হক বিজয় ও খালেদ আহমেদরা। তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমার মনে হয় না যে কেউ এটাকে প্র্যাকটিস ম্যাচ বা সাধারণ টুর্নামেন্ট বলে হিসাব করবে। আমরা যতটুকু জাতীয় দলে সিরিয়াস থাকি বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ খেলার সময় ওই লেভেলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
প্রথম ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল হেরেছে ৪ উইকেটে। তরুণ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল ১৯৭ রানের লক্ষ্য টপকে যায় সহজেই। অর্ধশতক হাঁকান ইরফান শুকুর ও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *